১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল লিখ

"১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল লিখ।"- শিরোনামে আমাদের এই লেখাটি "স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস" নামক সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর হিসেবে লেখার উপযোগী করে লেখা হয়েছে। এই প্রশ্নটি এভাবেও আসতে পারে যে, "১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল ব্যাখ্যা কর।"

১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল লিখ

১৯৫৪ সালের নির্বাচন

বাংলাদেশ, শত বছরের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার একটি ছোট দেশ। এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের শত বছরের পথচলার একটি ছোট পদক্ষেপ ছিল ১৯৫৪ সালের নির্বাচন। বাংলাদেশ, এবং তৎকালীন পুরো পাকিস্তানের ইতিহাসে ১৯৫৪ সালের নির্বাচন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। ইতিহাস আমাদের জানায়, পাকিস্তানের শাসক দলের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিবাদ করে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্বের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহন করে "যুক্তফ্রন্ট" নামক একটি জোট। যুক্তফ্রন্টের সেই জোটে ছিল থাকা দলগুলো হলো:

  • শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের "কৃষক শমিক পার্টি"
  • মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর "আওয়ামী লীগ"
  • মাওলানা আতাহার আলীর "নেজামী ইসলামী"
  • খিলাফতে রব্বানী পার্টি নামক একটি দল
  • এবং হাজী দানেশের "গণতন্ত্রী দল"।


এই দলগুলো নিয়ে গঠিত যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা প্রতীক।

১৯৫৪ সালের এই নির্বাচনের মাত্র বছর দুই আগে বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন করে পাকিস্তানীদের গুলিতে নিহত হন আব্দুস সালাম, বরকত, রফিক, আব্দুল জব্বাররা। সে সময় থেকেই পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর প্রতি এদেশের মানুষের যে ক্ষোভ তার বহিঃপ্রকাশের সুযোগ পায় বাঙালিরা ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে। এই নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২১ দফা কর্মসূচী প্রণয়ন করে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার হিসেবে যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হলো:

  • বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা
  • জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ করা
  • খাল খনন ও সেচের ব্যবস্থা করা
  • ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা
  • মন্ত্রীদের বেতন এক হাজার টাকার বেশি না করা
  • দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করার কার্যকর ব্যবস্থা অবলম্বন করা ইত্যাদি

১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল

এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৪ সালের মার্চে। নির্বাচনের ফলাফল ছিল যুক্তফ্রন্টের পক্ষে এবং তা বিশাল ব্যবধানে। প্রাদেশিক আইন সভার মোট ৩০৯টি আসনের মধ্য থেকে সেসময় ক্ষমতায় থাকা পাকিস্তানের মুসলিম লীগ পায় ১০টি আসন। তফসিলী ফেডারেশন ২৭টি, খেলাফত ১টি সহ আরও কিছু দল কয়েকটি আসন পায়। বাকি ২৩৬ আসনে বিজয়ী হয় যুক্তফ্রন্ট। স্বৈরাচারী শাসনের পতনের প্রথম পদক্ষেপে জয়ী হয় বাংলাদেশের মানুষেরা। যদিও এই যুক্তফন্ট্র বিভিন্ন কারণে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ কাদেরকে চায়, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় অনেক বেশি।

[ইতিহাসভিত্তিক এই তথ্যগুলোতে আমাদের অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুল থেকে থাকলে তা আমাদেরকে দেখিয়ে দেয়ার অনুরোধ থাকলো। পাঠগৃহ নেটওয়ার্কের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।]

আরও দেখুন:

সহায়ক লিংক:

Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺