বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো

বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষাতে আসতে দেখা যায়। এই অংশ থেকে বিভিন্নভাবে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে আর তার মধ্যে বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করতে বলা হয়ে থাকে। আজকের এই লেখাটি পড়ার পরে আপনি বুঝতে পারবেন বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য কিভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং এর মূল তাৎপর্য কি।

বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য

বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য

বাঙালি জাতি একটি সংকর জাতি। বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণে এ জাতি তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই অঞ্চলে বিভিন্ন অংশ থেকে বিভিন্ন জাতির আগমন ঘটে। এবং তাদের থেকে মূলত বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজকের বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে। বাংলা ভাষাভাষী এই অঞ্চলটি বিভিন্ন জনগণ পূর্ব থেকে বসবাস করে আসছেন। যেহেতু বাঙালি জাতির মধ্যে বিভিন্ন জাতের সংমিশ্রণ দেখা যায় সেহেতু বাঙালি জাতিকে নৃতত্ত্ববিদগণ নৃতাত্ত্বিক দিক থেকে একটি সংকর জাতি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

প্রাচীনকালে এ সকল জনগোষ্ঠী আলাদা আলাদা স্থানে বসবাস করতেন তবে একত্রিত হয়ে বসবাস করতেন। এর পরবর্তীতে সভ্যতার উন্নয়নের সাথে সাথে এই সকল জনগোষ্ঠীরা একে অন্যের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলা এবং বৃহৎ একটি সংকর জাতির অঞ্চল গড়ে তোলে।

খাদ্যশস্যের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণে দেখা যায় বাঙালি জাতির প্রধান খাদ্য ভাত। প্রাচীনকাল থেকেই এই অঞ্চলে ধান উৎপাদনের পরিমাণ অনেক ভালো হতো। এই অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ার কারণে বিভিন্ন প্রজাতির ধানের অনেক আগে থেকেই ভালো ফলন হতো। যার কারণে এই অঞ্চলের মানুষদের কাছে ভাত হয়ে ওঠে প্রধান একটি খাদ্য যা শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।

ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবার প্রধান খাদ্য ভাত আর ভাতের পাশাপাশি আরেকটি প্রিয় খাদ্য মাছ। এইজন্য বলা হয়ে থাকে "ভাতে মাছে বাঙ্গালী"। যেহেতু এদেশে নদীর পরিমাণ অনেক বেশি সেহেতু এই অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই মাছের সহজলভ্যতা ছিল যার কারণে মাছ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার কাছে একটি অন্যতম প্রধান খাদ্য হয়ে ওঠে।

পূর্বে বাঙালিরা একত্রিত হয়ে বড় পরিবার গঠন করে বসবাস করতেন। একটি বাড়িতে কয়েক প্রজন্মের মানুষজন একত্রিত হয়ে বসবাস করতেন। কিন্তু বর্তমানে বাঙ্গালীদের বৃহৎ পরিবার থেকে ছোট পরিবার গঠনের দিকে বেশি অগ্রসর হতে দেখা যাচ্ছে।

পোশাকের ব্যবহারেও বাঙ্গালীদের বিচিত্রতা রয়েছে। প্রাচীনকালে পুরুষরা সাধারণত ধুতি ব্যবহার করতেন এবং মেয়েরা শাড়ি পরেন। বাঙালি মুসলমানদের পোশাকে ফরাজি আন্দোলনের নেতারা পরিবর্তন নিয়ে আসেন। তারা বাংলায় লুঙ্গির প্রচলন শুরু করেছিলেন। প্রথমদিকে শুধুমাত্র মুসলমানরা লুঙ্গি পরা শুরু করলেও পরবর্তীতে এ দেশের অন্যান্য ধর্মের মানুষরাও লুঙ্গি পরা শুরু করেন। এছাড়া বাঙালিরা পাঞ্জাবি, ফতুয়া ইত্যাদি পোশাক পরিধান করে থাকেন।

আরো পড়ুন: বাঙালি জাতিকে সংকর জাতি কেন বলা হয়

এই ছিল বাঙালির নৃতাত্ত্বিক পরিশিষ্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ লেখা পড়তে হলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটকে ঘুরে দেখতে পারেন। এছাড়া আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করতে পারেন বিভিন্ন আপডেট পাওয়ার জন্য।

Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺