ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা করুন একদম সহজে!

আপনি কি ভাবছেন কিভাবে আপনার ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা করবেন? তবে আমাদের এই পেইজটি আপনাকে সাহায্য করবে। আপনি খুব সহজে আমাদের এই ওয়েব পেজের মাধ্যমে আপনার ইন্টারনেটের গতি কে পরীক্ষা করতে পারবেন এবং সে গুলোকে যাচাই করতে পারবেন। নিচে আপনার ইন্টারনেটের গতি দেখানো হলো:


উপরের টেস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন Ping, JITTER, Download speed, Upload speed এর পরিমাণ কি। এবং নিচে আমরা আরও বেশ কিছু টেস্ট দিয়ে দিয়েছে যাতে করে আপনারা আরো ধারণা পেতে পারেন।

আপনি যদি নেটফ্লিক্স ব্যবহার করে থাকেন তবে নিচের এই টেস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার নেটফ্লিক্সের জন্য কতটুকু স্পিড আপনি পেতে পারেন। এটি মূলত fast.com থেকে দেওয়া হয়েছে এবং আমরা এটাকে আমাদের ওয়েবসাইটে Add করে দিয়েছি। নিম্নে Netflix এর জন্য আপনার ইন্টারনেটের গতি দেখানো হয়েছে:


ইন্টারনেট স্পিড টেস্ট কিভাবে করা হয়

যখন আপনি কোন সার্ভিস ব্যবহার করতে যান বা কোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে চান তখন আপনার ডিভাইস ইন্টারনেটের সাহায্যে ওই সার্ভিস বা ওয়েবসাইট যে সার্ভারের সাথে যুক্ত রয়েছে সেখানে তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করে। আর এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কতটা তাড়াতাড়ি আপনার ডিভাইস ওই সার্ভারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে এবং কোন একটি কাজ সম্পন্ন করতে পারে সেই মাপকাঠি মূলত ইন্টারনেটের স্পিড হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত।

Internet speed test Bangla

ইন্টারনেটের গতি নির্ধারণ করার জন্য বেশ কিছু জিনিস বিবেচনায় আনা হয়। যেমন: কতটুকু ডাটা আমরা কতটুকু সময়ের মধ্যে সার্ভারে পাঠাতে পারব, আবার কতটুকু ডাটা আমরা সার্ভার থেকে কতটুকু সময়ে আমাদের ডিভাইস আনতে পারব।

ডেটা সার্ভার থেকে ডিভাইসে আসার Speed কে বলা হয় ডাউনলোড স্পিড (Download Speed) । ডাটা ডিভাইস থেকে সার্ভারে সংরক্ষণ হওয়ার Speed কে বলা হয় আপলোড স্পিড (Upload Speed)।ডাউনলোড স্পিড ও আপলোড স্পিড এর সময়গত যে পার্থক্য বিদ্যমান থাকে তাকে মূলত Ping বলা হয়। এটি দিয়ে মূলত সার্ভারের সাথে ডিভাইসের real-time কানেকশনের পরিমাপ কে বুঝানো হয়। এটি মূলত লাইভ স্ট্রিমিং, গেমিং এবং লাইভ চ্যাটিং এর জন্য সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। Ping এর পরিমাপ যত কম হবে ততো ভালো ইন্টারনেট কানেকশন আপনার রয়েছে বলে গণ্য করা হবে।

ইন্টারনেটের গতি ওয়েবসাইট অনুযায়ী বিভিন্ন হয় কেন

ইন্টারনেটের গতি সার্ভারের লোকেশন এর উপরে অনেকটা নির্ভর করে থাকে। সার্ভারের দূরত্ব ডিভাইস থেকে যত বেশি হবে আপলোড স্পীড ডাউনলোড স্পিড ততটা কমে যাবে। কারণ অনেক দূরে যেহেতু ডেটাকে যাতায়াত করতে হচ্ছে সেহেতু সেটাকে আসতে অনেকটা সময় প্রয়োজন হবে। এই জন্য মূলত দূরবর্তী সার্ভারে Ping এর পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে।

একইভাবে BDIX সার্ভারগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ এ থাকার কারণে আমরা যেকোনো জিনিস খুব সহজেই সেখান থেকে ডাউনলোড বা আপলোড করতে পারি। এর মূল কারণ হচ্ছে সার্ভার লোকেশন। যেহেতু এগুলো আমাদের দেশে অবস্থিত সেহেতু ডেটাকে অনেক দূরবর্তী স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে না। এতে করে সময় এবং এটা যাতায়াতের খরচ বেঁচে যাচ্ছে।

বিভিন্ন সার্ভারের সাথে Ping কিভাবে নির্ণয় করবেন

Ping বিভিন্ন সার্ভারের সাথে বিভিন্ন রকম হতে পারে। এটা নির্ভর করে একটি সার্ভার ঠিক কতটা দূরে অবস্থিত এবং আপনার ডিভাইস সার্ভারের সাথে কতটা ভালো ভাবে যুক্ত হতে পারছে। অবশ্যই এর সাথে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগের যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কোন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের Ping নির্ণয়ের জন্য প্রথমত আপনাকে আপনার কম্পিউটারের Command prompt ওপেন করতে হবে। এর জন্য আপনি উইন্ডোজ সার্চ বারে সার্চ করতে পারেন CMD লিখে।এরপরে আপনাকে নিচে দেওয়া কমান্ড কে দিতে হবে এবং 'Enter' চাপতে হবে। ping লেখার পর স্পেস দিয়ে যেকোনো যেকোনো URL ব্যাবহার করুন (http://, https:// বাদ দিয়ে) 

ping www.pathgriho.com

এর পরে আপনি ওই নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের বা ঐ নির্দিষ্ট সার্ভারের সাথে আপনার ডিভাইসের Pingনির্ণয় করতে পারবেন।

ping command in command prompt

এভাবে আপনি নির্দিষ্ট সার্ভারের সাথে আপনার ডিভাইসের নির্ণয় করতে পারবেন। উল্লেখিত হলুদ রঙের যে অংশটি দেখানো হয়েছে সেটি মূলত নির্দেশ করে ping কে।

কার কেমন ইন্টারনেট দরকার

আপনি যদি সাধারণত ওয়েব ব্রাউজিং করে থাকেন এবং খুঁটিনাটি কাজ করে থাকেন সেই ক্ষেত্রে আপনার জন্য মোটামুটি মানের ডাউনলোড এবং আপলোড স্পিড যথেষ্ট। সেই ক্ষেত্রে আপনাকে অন্যান্য বিষয় মাথায় না রাখলেও চলবে।

আপনি যদি লাইভ স্টিমিং করেন তো সেই ক্ষেত্রে আপনার জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপলোড স্পিড। আপলোড স্পিড যত ভাল হবে আপনার লাইভ স্ট্রিমিং এর মান তত ভালো হবে। কেননা লাইভ স্ট্রিমিং এর সময় আপনার ডিভাইসের থেকে সার্ভারে স্ট্রিমিং ডাটা পাঠানো হয়। তারপর সেগুলো সাধারণ মানুষের কাছে সার্ভার থেকে পৌঁছে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আপলোড স্পিড যত বেশি হবে আপনার লাইভ স্টিমিং এর মান ততই ভালো হবে। সাধারণত স্টান্ডার্ড মানের লাইভ স্ট্রিমিং করার জন্য 10mbps আপলোড স্পীড অন্ততপক্ষে প্রয়োজন হয়। এর থেকে কম আপলোড স্পিডে আপনি লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারবেন, কিন্তু সে ক্ষেত্রে অনেক সময় অনেক ধরনের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যেমন: ভিডিও বাফারিং এবং ভয়েস বাফারিং।

আপনি যদি গেমিং করে থাকেন সেই ক্ষেত্রে Ping অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ এটি আপনার real-time গেমিংয়ের জন্য সবথেকে বড় সাহায্য করে। ধরুন আপনি কোন একটা গেম খেলছেন, যেখানে প্রতিপক্ষ আপনাকে অ্যাটাক করতে এসেছে। সেই ক্ষেত্রে আপনার যদি ping এর পরিমাণ বেশি থাকে তবে আপনাকে অনেক বেগ পেতে হবে। এক্ষেত্রে Gaming এর জন্য low latency এবং low ping এর ইন্টারনেট লাইন অনেক বেশি প্রয়োজন।

ইন্টারনেট স্পিড কিভাবে বাড়ানো যায়

আসলে আপনাকে আপনার ISP থেকে যতটুকু ইন্টারনেট দেওয়া হবে আপনি ঠিক ততটাই ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি চাইলেই তার থেকে বেশি পরিমাণে স্পীড পাবেন না। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আপনি মাথায় রাখলে আপনার উক্ত ইন্টারনেট এর সঠিক ব্যবহার করতে পারবেন।

অনেক সময় দেখা যায় আমাদের কম্পিউটার বা ফোনে অনেক অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে যেগুলো আসলে ইন্টারনেটের ব্যবহার করতে থাকে। তো আমাদের যদি সেই অ্যাপস গুলো প্রয়োজন না হয় তবে আমরা সেগুলো কে যদি বন্ধ করে দিতে পারি। এতে করে ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা ব্যবহার হবে না এবং আপনি ইন্টারনেটের অপচয় করছেন না। কম্পিউটারে আপনি টাস্ক ম্যানেজার থেকে খুব সহজে এই কাজটি করে ফেলতে পারেন। অর্থাৎ ও অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলোকে End Task করে বন্ধ করে দিতে পারেন।

Task Manager windows 10

আপনার রাউটার ততটুকু সময় চালু রাখুন যতটুকু সময় আপনি সেটাকে ব্যবহার করছেন। দীর্ঘক্ষন ধরে যখন আপনি আপনার রাউটারকে বিনা কারণে চালু রাখেন সেই ক্ষেত্রে সেটা গরম হয়ে যায় এবং ভিতরের কাজগুলো ধীরে চলতে থাকে। এতে করে আপনি ধীর গতির ইন্টারনেট অনুভব করেন।

অবশ্যই বজ্রপাতের সময় রাউটার কে বন্ধ রাখবেন এবং রাউটারের সাথে যুক্ত থাকা লাইনকে বিচ্ছিন্ন করে দেবেন। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাউটার নষ্ট হওয়া ও রাউটার এর কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে বজ্রপাতের ভূমিকা থাকে। কেননা কাছাকাছি হওয়া বজ্রপাত থেকে যে পরিমাণের ইলেকট্রিসিটি আপনার রাউটারে এসে পৌঁছায় তা রাউটার অনেক ক্ষতি করে থাকে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

১) ভালো ইন্টারনেট থাকার পরেও কেন আমার Game lag করে?

উত্তর: আপনার পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তিরা যদি একই সাথে অন্যান্য ইন্টারনেট-ভিত্তিক ক্রিয়াকলাপগুলি (যেমন স্ট্রিমিং চলচ্চিত্র, ভিডিও চ্যাট এবং ওয়েব ব্রাউজ করা) করতে যাচ্ছেন তবে এটি ব্যান্ডউইথকে চাপ দিতে পারে। এছাড়া Ping এবং Latency এর কারণে আপনার Game lag করতে পারে।

২) আমি কীভাবে আমার ইন্টারনেটের গতি বাড়িয়ে তুলতে পারি?

উত্তর: আপনার রাউটারকে আরও ভাল জায়গায় নিয়ে যান, আপনার রাউটারের অ্যান্টেনাকে সামঞ্জস্য করুন, আপনি সঠিক ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে রয়েছেন তা নিশ্চিত করুন, রাউটারটি বন্ধ করুন এবং আবার চালু করুন। এগুলো মূলত সবথেকে সাধারণ পদ্ধতি ইন্টারনেটের গতি কে স্বাভাবিক করে তোলার জন্য।

৩) ২ টা রাউটার থাকলে কি ইন্টারনেটের গতি বাড়ে?

উত্তর: রাউটার যুক্ত করা আপনার ইন্টারনেটের গতিকে প্রভাবিত করবে না। এটি আপনার পরিষেবা পরিকল্পনা দ্বারা প্রিসেট করা হয়। তবে এটি আপনার অফিস নেটওয়ার্ককে আপনার ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারী (আইএসপি) দ্বারা নির্ধারিত গতির ব্যবহার অনুকূল করতে সহায়তা করবে।

৪) এই ইন্টারনেট গতির পরীক্ষা কীভাবে কাজ করে?

উত্তর: ডাউনলোডের গতি পরীক্ষা করতে, পরীক্ষার সরঞ্জামটি আপনার ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে একটি ফাইল ডাউনলোড করে এবং ডাউনলোডটি শেষ হতে কতক্ষণ সময় নেয় তা পরিমাপ করে।

উপসংহার:

ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে আমরা সবাই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হয়ে থাকি। এবং এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সব সময় ইন্টারনেট আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে। আর আপনি যদি আপনার ইন্টারনেটের গতি সম্পর্কিত বড় ধরনের কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই নিজের ISP এর সাথে শেয়ার করুন এবং তাদেরকে তা ঠিক করে দিতে বলুন। আপনি নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন আমরা যথা সম্ভব সেটার সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করব।
Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺